বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮ অপরাহ্ন

ঘোষনা :
  সম্পূর্ণ আইন বিষয়ক  দেশের প্রথম দৈনিক পত্রিকা   দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল এর  পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা   । 
সংবাদ শিরোনাম :
ভূমি অধিগ্রহণে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হলে কী করবেন? ইবির জিওগ্রাফী বিভাগ: শিক্ষার্থীদের কাছে দরখাস্ত দিয়ে পদত্যাগ করলেন সভাপতি যুগে যুগে দালাল সাংবাদিকদের করুন পরিণতি বনাম কিছু শিক্ষনীয় গল্প! তালাকের নোটিশ গ্রহণ না করলেও ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হয়ে যাবে! শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকা, না থাকা নিয়ে যত সংশয়! ইসলাম বিদ্বেষী উগ্র সাম্প্রদায়িকতার বরপুত্র ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর! অপমান ও মানহানির শিকার হলে কী করবেন? গোপনে ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি দিয়ে প্রতারণার শিকার হলে কী করবেন? স্বাধীনতার ৫৩ বছরঃ ১৭ বার সংবিধান সংশোধন ও আমাদের জাতীয় সংগীত! Special Education Needs and Disabilities (SEND)
মূর্খ, অশিক্ষিত, নেশাখোর, ঘোষখোর ও দালালরা ‘সাংবাদিকতা’ পেশায় কেন প্রশ্নের উত্তর!

মূর্খ, অশিক্ষিত, নেশাখোর, ঘোষখোর ও দালালরা ‘সাংবাদিকতা’ পেশায় কেন প্রশ্নের উত্তর!

 

এ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক :
দীর্ঘ আড়াই যুগ মফস্বল সাংবাদিকতার সুযোগে বিভিন্ন রকমফের সাংবাদিকের সাথে চেনা, জানা, বুঝার সুযোগ হয়েছে।
মফস্বলের কিছু কথিত শিক্ষিত, সিনিয়র, ভাবওয়ালা সাংবাদিকদের গাত্রদাহ রয়েছে শিরোনামে এডজেকটিভযুক্ত সাংবাদিকদের প্রতি। মাঝে মধ্যে ফেসবুকে এ জাতীয় সাংবাদিকদের নিয়ে ফেসবুকে ‘মূর্খ আর অশিক্ষিত’ বলে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায়। উদ্দেশ্য গাত্রদাহ দমন ও সেই সাথে তিতা কথা হচ্ছে টাকার ভাগ কম পাওয়া। আমার প্রশ্ন হচ্ছে কুলি, দিনমজুর, গরুর দালাল, থানার দালাল, জমির দালাল, রাজমিস্ত্রি, মাস্তান, রাজনীতিক, দোকানদারসহ মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পেছনে কারণ কি? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে, পেতে, নিতে একটু ভাবুন যে, আমি, আপনার মতো সিনিয়র, কথিত শিক্ষিত সাংবাদিকদের ওপর এ বর্তায় না কি-না? এ দায় আমার, আপনার মতো দক্ষ ও শিক্ষিত সাংবাদিকের অদক্ষতার ফসল।

কারণসমূহ
১। একজন সাংবাদিক আরেকজনকে ঘায়েল করতে মূর্খদের দলে টেনে দল ভারী করে।
২। মূর্খদের দলে টেনে শিষ্য বানিয়ে নিজেকে গুরু হিসেবে জাহির করে।
৩। দল-বল নিয়ে ভেড়ার পাল সাজিয়ে ধান্দাবাজিতে গিয়ে দু পয়সা বেশি কামিয়ে নেয়া
৪। মূর্খদের দলে টেনে নামে-বেনামে সাংবাদিক সংগঠন গড়ে তোলা ও তা লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রুপ দেয়া
৫। মূর্খদের দলে টেনে নামে-বেনামে কথিত পত্রিকার কার্ড দিয়ে বিজ্ঞাপন বানিজ্য

 


কথিত সিনিয়র ও শিক্ষিত সাংবাদিক বন্ধুরা আমার উপর চটবেন না। কথাগুলোর প্রমাণ চাইলে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারব। মূর্খদের এ পেশায় আসার পেছনে কোন না কোন সিনিয়র বা দক্ষ ও শিক্ষিত সাংবাদিকেরই আপনাদেও অদানই সবচেয়ে বেশি।

সম্প্রতি গ্রামের বাড়িতে গেলে প্রতিবেশী এক ছোট এসে বললো, ‘ভাই আপনিতো পত্রিকার সম্পাদক, আমাকে একটা সাংবাদিকতার কার্ড করে দেন’। আমি আশ্চর্য্য হইনি, লজ্জাও পায়নি। শুধু প্রশ্ন করেছিলাম যে, একটা আইডি কার্ড থাকলেই কি ‘সাংবাদিক’ হওয়া যায় ? সাংবাদিকতা করতে কি কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই? উল্টো করে ওই ছোট ভাই আমাকে একটি উদাহরণ টেনে ছোবক দিল। ‘অনেকেই তো করেন এটা! কিছু টাকা খরচ করে কার্ড করেছে, এখন তিনিও তো সাংবাদিক!’ ওই পাড়ার অমোক, পশ্চিম পাড়ার তমোক। বুঝতে আর বাকি রইলো না ব্যার্থতা আমাদেরও রয়েছে। যাই হোক বুঝিয়ে বললাম ‘ভাই আগে পড়ালেখা শেষ করো, সাংবাদিকতা করতে চাইলে আগে এ বিষয়ে জানো। তারপর এ পেশায় এসো।’

মূর্খদের সাংবাদিকতায় আসার পেছনে শুধু কথিত ব্রাক্ষ্মণ সাংবাদিকদেরই আমি দায়ি করবো না, এখানে মিডিয়ার মালিক কর্তৃপক্ষও কম দায়ি নয়।

ইদানিং অনেক টিভি কর্তৃপক্ষকে দেখা যায়, বহু ‘টেকনিক’ শিখে গেছেন তারা। প্রথম শ্রেণির টিভি চ্যানেলগুলো এক জেলায় একজন ‘জেলা প্রতিনিধি’ নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এবং তারা যতটুকু সম্ভব বেতন ভাতাও দেন। কিন্তু কিছু ভুঁইফোড় ‘টিভি চ্যানেল’ প্রতিটি জেলায় দুই থেকে চারজনও প্রতিনিধি নিয়োগ দিচ্ছে। উপজেলা প্রতিনিধি তো আছেই। তারা ইতোমধ্যেই জেলা প্রতিনিধি (উত্তর), জেলা প্রতিনিধি (দক্ষিণ) ও জেলা সদর প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে আসছেন। হয়তো আগামীতে তারা জেলা প্রতিনিধি (পশ্চিম), জেলা প্রতিনিধি (পূর্ব), জেলা প্রতিনিধি (উত্তর কোণ), জেলা প্রতিনিধি (দক্ষিণ কোণ), জেলা প্রতিনিধি (পশ্চিম কোণ), জেলা প্রতিনিধি (পূর্ব কোণ), জেলা প্রতিনিধি (স্পেশাল), জেলা প্রতিনিধি (স্টাফ), জেলা প্রতিনিধি (ক্রাইম), জেলা প্রতিনিধি (ব্যুারো) সহ আরো কত যে পদে নিয়োগ দেবেন তা একমাত্র আল্লাহ জানেন।

এই যে বিভিন্ন পদে তারা জেলা-উপজেলায় নিয়োগ দিচ্ছেন তাদের কি শুধু শুধুই নিয়োগ দিচ্ছেন? আপনি হয়তো জানেন না। তবে আমি নিশ্চিত যে তারা কিন্তু বিনে পয়সায় নিয়োগকর্ম চালায় না। আবার প্রথম শ্রেণির টিভি চ্যানেলের মত তাদের আবার নামমাত্র কথিত বেতন ভাতা দেয়ার ঝামেলাও নেই। নিয়োগ দিয়ে শুধু একটাই উপদেশ তারা দেন তা হলো- ‘নাও আর যাও। বাবা, কামাই করে খাও’। এসব নিয়োগ বাণিজ্য হয়তো মফস্বলের সিনিয়র সাংবাদিকদের থামানোর ক্ষমতা নাও থাকতে পারে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে তাদের করণীয় কি?

সহজ উত্তর প্রতিটি জেলা-উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিকদেরই এ সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন, রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ সাংবাদিকদের সকল সংগঠনকে এক হয়ে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। না হলে হয়তো মফস্বল সাংবাদিকতায় কুলি, দিনমজুর, গরুর দালাল, থানার দালাল, জমির দালালসহ মূর্খ আর অশিক্ষিত মানুষদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

হয়ত অচিরেই কুলি, দিনমজুর, গরুর দালাল, থানার দালাল, জমির দালালসহ মূর্খ আর অশিক্ষিত সাংবাদিকতায় অভ্যস্থ ব্যক্তিবর্গ কোনো অ্যাডভোকেটের কাছে গিয়ে বলবে ভাই আমাকে একটা কার্ড করে দেন, ‘ওকালতি’ করবো।

এই সংবাদ টি সবার সাথে শেয়ার করুন




দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।  © All rights reserved © 2018 dainikinternational.com
Design & Developed BY Anamul Rasel